ফলিক অ্যাসিড এবং প্রেগন্যান্সি

ফলিক অ্যাসিড কী ?

ফলিক অ্যাসিড হল এক রকমের ভিটামিন-বি এর একটি কৃত্রিম রূপ, এটি তরলে দ্রবণীয় ভিটামিন গুলির মধ্যে একটি যা কোষের বিপাক এর মৌলিক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। বিশেষ করে ভিটামিন বি9 নামে পরিচিত। ফলিক অ্যাসিড মানুষের শরীরে নতুন কোষ উৎপাদনে সাহায্য করে।  ডিএনএ তৈরির ক্ষেত্রে এটা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। গর্ভধারণের উপযুক্ত করে তুলতে ফলিক এসিডের গুরুত্ব অনেক। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্রুণের নিউরাল টিউব গঠন ও তার বেড়ে ওঠার জন্য ফলিক অ্যাসিড প্রয়োজন এবং ভ্রূণের মস্তিষ্কের গঠন এর ভূমিকা রয়েছে।

খাওয়ার পরিমান: 

চিকিৎসকদের মতে মেয়েদের সন্তান ধারণের বয়স হওয়ার পর থেকেই ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করা উচিত। ফলিক আ্যাসিড গর্ভধারণের অন্তত একমাস আগে থেকে প্রতিদিন খাওয়া উচিত। প্রেগন্যান্সি চলাকালীন ও সন্তান জন্ম নেওয়ার পরেও ফলিক অ্যাসিড খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে। গর্ভধারণের পর প্রথম তিনমাস প্রতিদিন ৫০০ মাইক্রোগ্ৰাম এবং  চতুর্থ মাস থেকে নবম মাস পর্যন্ত প্রতিদিন ৬০০ মাইক্রোগ্ৰাম ফলিক অ্যাসিড খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

ফলিক অ্যাসিড এর উপকারিতা: 

গর্ভধারণের প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভ্রুণের মেরুদণ্ড তৈরি হয়। এই সময় ভ্রুণের জন্য ফলিক অ্যাসিড অত্যন্ত জরুরি। যেসব মায়েরা গর্ভধারণের আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড খান, তাদের ক্ষেত্রে প্রিম্যাচিউর বার্থের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। গর্ভে থাকাকালীন শিশুর ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ যখন সম্পূর্ণ তৈরী হয়না তখন বিজ্ঞানের পরিভাষায় একেই অ্যানেনসেফালি বলা হয়। এসব ক্ষেত্রে সদ্যোজাত শিশুটির আয়ুও কমে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই গর্ভধারণের আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড নিয়মিত খেলে ভ্রুণের এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

ফলিক অ্যাসিড এর উৎস: ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে: গাঢ় সবুজ রঙের পাতাওলা সবজি যেমন পালংশাক, মূলাশাক, সরিষাশাক, ব্রকলি, গাজর, মটরশুঁটি, বীজজাতীয় সবজি, ফলের মধ্যে পেঁপে, কমলা, আঙুর, স্ট্রবেরি, পাউরুটি ইত্যাদি।

সবশেষে প্রত্যেক মায়ের উচিত শিশুর এবং নিজের স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে পরিমিত পরিমানে ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা এবং শিশুকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা।