ব্ল্যাকহেডস প্রতিরোধে করণীয়

ব্ল্যাকহেডস কি?

ব্ল্যাকহেডস হচ্ছে এক ধরণের ছোট বাম্প যা ক্লগড হেয়ার ফলিকলের জন্য ত্বকের উপর হয়ে থাকে। যেহেতু এই বাম্প গুলো কাল বর্ণের হয় তাই এদের ব্ল্যাকহেডস বলে। ব্ল্যাকহেডস আসলে এক ধরণের অ্যাকনে যা মূলত মুখমণ্ডলে হয়ে থাকে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গা যেমন-পিঠে, বুকে, ঘাড়ে, হাতে এমনকি কাঁধেও ব্ল্যাকহেডস হতে পারে।

ব্ল্যাকহেডস কেন হয়?

ব্ল্যাকহেডস হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে ত্বকে ময়লা বা ধুলাবালি জমে থাকা। ময়লা বা ধুলাবালির কারণে আমাদের ত্বকের পোরস গুলো যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন ব্ল্যাকহেডস হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য কারণেও ব্ল্যাকহেডস হতে পারে যেমন –

১। ধুলাবালি এবং ডেড স্কিনঃ ব্ল্যাকহেডস হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে অপরিষ্কার ত্বক এবং ডেড স্কিন সেল। ধুলাবালি এবং ডেড স্কিন সেল পোরস ক্লগ করে এবং এর ফলে ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়।

২। অতিরিক্ত ঘামঃ অতিরিক্ত গরমের কারণে বা অতিরিক্ত ঘামের জন্যও ব্ল্যাকহেডস হতে পারে। আমরা অনেকেই এক্সারসাইজের পর ঠিকভাবে ফেসওয়াশ করিনা, ফলে আমাদের ত্বকে ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়।

৩। তৈলাক্ত ত্বকঃ তৈলাক্ত ত্বকে ব্ল্যাকহেডস বেশি হয়ে থাকে। যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে থাকে তাহলে খালি হাতে ত্বক স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। কারণ হাতে লেগে থাকা ধুলাবালি এবং জীবাণু ত্বকে লাগলে ব্ল্যাকহেডস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এছাড়াও আপনার ব্যবহৃত ফোনটি কিছুক্ষন পর পর মুছতে ভুলবেননা কারণ আমরা যখন ফোনে কথা বলি তখন ফোন আমাদের ত্বকের স্পর্শে আসে এবং ফোনে লেগে থাকা জীবাণু বা ময়লা আমাদের ত্বকে লেগে যায়। যার ফলে ত্বকে ব্ল্যাকহেডস হতে পারে

ব্ল্যাকহেডস প্রতিরোধে করণীয়

১। ব্ল্যাক হেডসের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কেননা ত্বকের মৃত কোষ জমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। আর ধুলাবালি এবং নানা জীবাণু তো আছেই। তাই বাইরে থেকে এসেই ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন।

২। শুরুর দিকে নাক ও গালের ওপরের অংশে এই সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই একে গুরুত্ব দেয় না। যা ফলে সম্পূর্ণ মুখেই এই হেডস ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্ল্যাক হেডসের দাগ বসে যেতে পারে। শুরু থেকেই এর প্রতিরোধ করা উচিত। নিতে হবে সঠিক উপায়ে যত্ন। কিছু ঘরোয়া প্যাকে উপকার পেতে পারেন।

৩। যতটা সম্ভব অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার না করাই ভালো। আর প্রসাধনী ব্যবহারের পর ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে। বাজারে মেকআপ তোলার বিভিন্ন কিট পাওয়া যায়। আর মুখের জন্য আলাদা তোয়ালে কিংবা রুমাল ব্যবহার করুন।

৪। যতটা সম্ভব তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে সবজি ও ফল বেশি করে খান। আর প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন। এর ফলে ত্বকে তেলের পরিমাণ কমে যায়, ফলে ব্ল্যাকহেডসের সমস্যাও অনেকটা কমে আসে।

ব্ল্যাকহেডস দূর করতে বিভিন্ন ধরনের ফেস প্যাক

ফেস প্যাক ১:

 প্রথমে কুসুম গরম পানি নিন এবং যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে সেখানে মাখুন। এরপর একটি বাটি তে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা এবং পরিমাণমত টুথপেস্ট নিন। এবার পরিমাণমত পানি মিশিয়ে নিন এবং ভালো করে মিক্স করুন। এবারে ত্বকের যেখানে যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে সেখানে সেখানে মিক্সার টি মাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। 

ফেস প্যাক ২:

১ চা-চামচ কর্নফ্লাওয়ার, আধা চা-চামচ ভিনেগার, সমান পরিমাণ মধু, সঙ্গে পরিমাণমতো লেবুর রস এবং একটু চিনি মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মাস্ক। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী।

ফেস প্যাক ৩:

এ ছাড়া ২ চা-চামচ ডিমের সাদা অংশ, চন্দনের গুঁড়োর সঙ্গে একটু লেবুর রস মিশিয়েও প্যাক তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন এটি ব্যবহার করুন। প্যাক ব্যবহারের সময় নাক ও গালের চারপাশ ভালো করে ম্যাসেজ করে নিন। এটি স্ক্রাবের কাজ করবে।

সপ্তাহে ২ দিন ভালোমতো স্ক্রাব করে নিতে হবে। ঘরোয়া উপায়ে ফেসওয়াশের সঙ্গে চিনি মিশিয়েও স্ক্রাবিং করতে পারেন।

 

ব্ল্যাকহেডস খুব সাধারণ সমস্যা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে ব্ল্যাকহেডস হতে পারে। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। ত্বকের পরিপূর্ণ এবং যথাযথ যত্ন, ধুলাবালি এড়িয়ে চলা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বককে ব্ল্যাকহেডস থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।