গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

গর্ভাবস্থায় মায়েদের নিজেদের ও শিশুর স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করেই খাদ্যতালিকা গঠন করতে হয়। কোন খাবার খেলে পুষ্টি পাওয়া যাবে কোন খাবার এই অবস্থায় খাওয়া ঠিক না এইসকল বিষয়ে বেশ সাবধান হতে হয়। কারণ পরিমানের বেশি কোনো খাবার খেলে তাতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। আমরা বাঙ্গালীরা ভাত খেতে বেশ ভালোবাসি। ভাতের প্রতি এই ভালোবাসা আপনার গর্ভাবস্থায় আরো বেড়েও যেতে পারে। তবে প্রতিদিন কতটুক পরিমানে ভাত খেতে পারবেন সেক্ষেত্রে আপনাকে বিজ্ঞ হতে হবে। গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। 

গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার উপকারিতা: গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এতে কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় থাকে শিশুর বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১. তাৎক্ষণিক শক্তি: ভাতে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট থাকে। এটি আপনার শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। তাছাড়া আরও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস আছে যা মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

২. কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে: ভাতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে। এটি আপনার খাবার হজমে বেশ সহায়তা করে। এতে করে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধেও  সাহায্য করে। 

৩.হাড় মজবুত করে: ভাত ভিটামিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস, যেমন ভিটামিন ডি, রাইবোফ্লাভিন এবং থায়ামিন। এছাড়াও, ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফাইবার। তাই এটি মায়ের এবং শিশুর হাড় এবং দাঁত শক্তিশালী করতে বেশ উপকারী। 

৪. অনিদ্রা প্রতিরোধে সাহায্য করে: ভাত, বিশেষ করে ব্রাউন রাইসে মেলাটোনিন থাকে যা ঘুমের হরমোন যা স্নায়ুকে শিথিল করে এবং ঘুমের চক্র বাড়িয়ে দেয় এটি মাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় ভাত খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: এই সমস্ত স্বাস্থ্য উপকারিতা ছাড়াও, গর্ভবতী মহিলাদের ভাতের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে তা খুব কম। তবে গর্ভবস্থায় সকল বিষয় জেনে রেখে সচেতন হওয়া উচিত।

১. গর্ভবস্থায় অতিরিক্ত ভাত খাওয়া আপনার বর্তমান ওজনের সাথে অনেক বেশি অতিরিক্ত ওজন যোগ করতে পারে যা আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ গর্ভাবস্থায় যদি অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় তাহলে শিশুর ওজন এবং আপনার অতিরিক্ত ওজন বহন করতে বেশ কষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনার পায়ের হাড়ের উপর অনেক বেশি চাপ পড়বে। 

২. অতিরিক্ত ভাত খেলে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং আপনাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ভুগতে হতে পারে।

৩. অতিরিক্ত ভাত খাওয়ার সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো গবেষণায় দেখা গেছে যে ভাতে প্রচুর পরিমাণে আর্সেনিক রয়েছে যা অকালে মৃত্যু বা একটি মৃত শিশুর জন্ম হতে পারে, যদি আপনি অতিরিক্ত ভাত খান।

তাই গর্ভবস্থায় খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমানে ভাত রাখুন এবং অতিরিক্ত ভাত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এছাড়া অবশ্যই রাসায়নিক এবং কীটনাশক মুক্ত চাল কিনুন। প্রয়োজনে আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করুন।