চুলের যত্নে আমলকির উপকারিতা এবং এটির ব্যবহার

 

আদিকাল থেকেই আমাদের চুলের যত্নের একটি প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে  আমলকি। চুলের বৃদ্ধির জন্য আমলকিতে রয়েছে অসাধারণ সব উপাদান। স্বাস্থ্যকর এবং চকচকে চুল পেতে অনেকেই আমলকি ব্যবহার করে থাকেন। 

আমলকির গুনাগুন:

১. চুলের বৃদ্ধি: আমলকিতে উপস্থিত ফাইটো-নিউট্রিয়েন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ মাথার ত্বকের সঞ্চালন বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। আমলার ভিটামিন সি কোলাজেন প্রোটিন তৈরি করে। এটি চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। কোলাজেন চুলের ফলিকলের মৃত কোষকে নতুন চুলের কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে।

২. চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে: আমলকি আপনার চুলকে পুষ্ট, মজবুত এবং কন্ডিশন করতে পারে যার ফলে এটিকে চকচকে করে এবং আপনার চুলে ভলিউম যোগ করে। একটি আমলায় ৮১.২ শতাংশ পর্যন্ত আর্দ্রতা থাকে। যা শুষ্ক চুলের জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়া, আপনার যদি তৈলাক্ত চুল থাকে, তাহলে আমলা পাউডার ব্যবহার করুন, এটি আপনার মাথার ত্বকে উপস্থিত সমস্ত বাড়তি তেলকে ভিজিয়ে রাখবে এবং কন্ডিশনিং করবে।

৩. খুশকির চিকিৎসা করে: খুশকি সাধারণত শুষ্কতার ফলে হয়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকি  চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং খুশকি জমতে বাধা দেয়। আমলকির ভিটামিন সি, এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য খুশকি এবং চুলকানি বন্ধ করতে সাহায্য করে। 

৪. স্ক্যাল্প ক্লিনজার: মাথার স্ক্যাল্প পরিষ্কার করতে আমলকির রস দারুণ কার্যকর। এটি মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং চুলকে চকচকে করে। আমলকিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের চুলকে ধুলোবালি, দূষণের কারণে চুলের বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

৫. চুল মজবুত করে: আমলকির রস ত্বক ও চুল উভয়ের জন্যই উপকারী টনিক হিসেবে কাজ করে। এটি আপনার চুলের ফলিকলগুলিকে শক্তিশালী করে যার ফলে চুলের বৃদ্ধি এবং চুলকে শক্তিশালী করে। এছাড়াও, চুলের শিকড় শক্তিশালী করে এবং চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়। 

 চুলের যত্নে আপনি কীভাবে আমলকি ব্যবহার করবেন:

আপনি আপনার চুলের জন্য আমলকির তেল বা পাউডার বা রস ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যে ধরণের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে চান তার উপর নির্ভর করে আপনি দোকান থেকে আমলকি কিনতে পারেন। তাছাড়া বাড়িতেও তৈরী করতে পারেন। 

আমলকি পাউডার- কয়েকটি আমলকি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। কয়েক ঘন্টা রোদে শুকিয়ে নিন। এগুলিকে মিহি গুঁড়ো করে একটি বয়ামে সংরক্ষণ করুন। তারপর চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে কিংবা হেয়ার প্যাকে এটি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। 

আমলকির জুস: এটি বেশ সহজ প্রক্রিয়া। আপনি যে পরিমাণ রস বানাতে চান তার উপর নির্ভর করে কয়েকটি আমলকি নিন। এক গ্লাস আমলকি জুস বানাতে চাইলে ৩টি আমলকি নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এক গ্লাস পানি যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন। 

আমলকি তেল : কয়েকটা আমলকির টুকরো নিয়ে সেদ্ধ করুন। তারপর বিচি ফেলে টুকরো করে নিন। সেই টুকরোগুলি রোদে শুকিয়ে নিন। এবার নারকেল তেল নিন এবং শুকনো আমলকির টুকরোগুলো দিয়ে দিন। এগুলি নারকেল তেলে প্রায় ২০ মিনিটের জন্য গরম করুন। এবার মিশ্রণটিকে কিছুটা ঠান্ডা হতে দিন। তারপর সূর্যালোক থেকে দূরে সরিয়ে একটি বয়ামে সংরক্ষণ করুন।

আশা করছি এখন থেকে চুলের যত্নে আপনারা সঠিক উপায়ে আমলকি ব্যবহার করবেন এবং উপকৃত হবেন।