আমাদের শরীরে নির্দিষ্ট কিছু সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলাই হল টিকার প্রধান কাজ। গুরুতর রোগ থেকে আপনার সন্তানকে রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায় হল তাকে সময়মত টিকা দেওয়া। কখন কোন টিকা দিতে হবে তা নিয়ে অনেক বাবা-মায়েরাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখতে কোন বয়সে কোন টিকা দিতে হবে।
বাংলাদেশে সরকারিভাবে EPI কর্মসূচির আওতায় ০ থেকে ২ বছরের শিশুদের বিনা মূল্যে টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। প্রায় সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই টিকাদানের ব্যবস্থা রয়েছে। সম্প্রতি সরকারি টিকাদান কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। কয়েক বছর আগেও শিশুকে জন্মের পর থেকে ৪ বার টিকা দিলেই হত কিন্তু এখন তা ৬ বার করা হয়েছে। নতুন সংযোজিত টিকাগুলো হল নিউমোনিয়ার টিকা (পিসিভি), হাম ও রুবেলার টিকা (এমআর) এবং পোলিওর ইনজেকশন টিকা (আইপিভি)।
সরকারি টিকার মধ্যে প্রথম তিনটি টিকা দিতে হয় শিশুর জন্মানোর পর দেড় মাস, আড়াই মাস ও তিন মাস ১৫ দিনে। যক্ষ্মার টিকাটি ছাড়া অন্য টিকাগুলো প্রায় একই ধরনের। আবার ছয়, দশ ও চৌদ্দ সপ্তাহের শিশুকে পোলিও টিকা (মুখে খাওয়ার-ওপিভি), পেনটা ইনজেকশন (ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা) এই পাঁচ রোগের সম্মিলিত টিকা দিতে হবে।
ছয়, দশ ও আঠারো সপ্তাহে দিতে হয় নিউমোনিয়ার টিকা (পিসিভি ইনজেকশন)। পোলিও টিকা দেওয়া হয় ১৪ সপ্তাহে। শেষ দুটি হলো এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকা। এটি দিতে হয় ৯ মাস শেষ হলে এবং ১৫ মাসে। একই ধরনের দুটি টিকার মধ্যে ন্যূনতম অবশ্যই এক মাস সময়ের ব্যবধান থাকতে হবে, নইলে ২৮ দিনের আগেই একই টিকার ২য় ডোজ দিলে তা প্রথম ডোজ হিসেবেই ধরা হবে।
আপনার শিশুকে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো থেকেও টিকা দেওয়াতে পারবেন। এ সকল ক্লিনিকে বাচ্চার বয়স দেড় মাস হলে কলেরার টিকা, ১২ মাস হলে চিকেন পক্স , ১৮ মাস হলে হেপাটাইটিস-এ আর দুই বছর হলে টাইফয়েডের (ইনজেকশন) টিকা দিতে পারবেন।
সব বাবা মায়েরই উচিৎ তার সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সময়মত টিকা দেয়া।