ইফতারের খাদ্যতালিকা কেমন হওয়া উচিত

 

রোজার মাসে খাবারের ব্যাপারে সংযম পালন করে প্রয়োজন হলো সঠিক খাবারটি সঠিক সময় খেয়ে বেশী বেশী ইবাদত করা। এ সময়ে ইবাদাদের জন্য শরীরের সুস্থতা অনেক জরুরী। রোজার সময় অনেক ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পর প্রথম যে খাবার খাওয়া হয় তা হলো  ইফতার। তাই  ইফতারে আমাদের সবাইকে অবশ্যই নরম, সহজে হজমযোগ্য, পুষ্টিকর খাবার মেন্যুতে রাখতে হবে।রোজায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই অটোফ্যাজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোষসমূহ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এসময় আমাদের সুস্থতার জন্য সুষম খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে মনে রাখতে হবে যে, অনেক খাবার এক সঙ্গে না খাওয়াই ভালো।তাই ইফতারে এমনভাবে মেন্যু সিলেকশন করতে হবে, যেন তা থেকে সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।

ইফতারে যেসব খাবার গ্রহণ করা উচিত :

খেজুর :খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে খেজুর অন্যতম। তাছাড়া   খেজুরের মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আছে।  তাই ইফতারিতে ৫-৬ টা খেজুর খাওয়া খেতে হবে। 

ভিটামিন ও মিনারেল : ইফতারের জন্য ফল, ফলের জুস, শুকনো ফল বা খেজুর, সবজি ও শাক দিয়ে তৈরি খাবার খেতে হবে। সারাদিন রোজা রাখার ফলে পানির অভাব পূরণের জন্য তরল পানীয় হিসেবে গুড়ের শরবত, ঘরের তৈরি চিনি ছাড়া ফলের জুস, ডাবের পানি, ইসবগুল বা তোকমার শরবত, রুহ আফজা, লেবু পানি ও দইয়ের লাচ্ছি খেতে হবে। এতে করে শরীরে ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। 

মিষ্টিজাতীয় খাবার : ইফতারে অধিক মিষ্টিযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। তাই সরাসরি মিষ্টি না খেয়ে মিষ্টি জাতীয় ফল, পুডিং খাওয়া খেতে হবে।তবে ঠিক ইফতারের সময় দুধের তৈরি মিষ্টি খাবার যেমন- পায়েস, সেমাই ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। এ জাতীয় খাবার ইফতারি শেষে খেতে হবে। 

ইফতারে যেসব খাবার পরিহার করা উচিত :

ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার পরিহার করা : ইফতারে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার জন্য অবশ্যই তেল সমৃদ্ধ ও ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। 

টক জাতীয় খাবার পরিহার করা : টক জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি থাকে তার পাশাপাশি সাইট্রিক এসিডও থাকে।যেহেতু সাইট্রিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার এসিডিটির পরিমাণ বৃদ্ধি করে তাই এ খাবারগুলো ইফতারে পরিহার করতে হবে। 

ঝাল এবং অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করা :ইফতারে অনেকেই তেহারি, বিরিয়ানি এরকম নানা ধরনের খাবার খান। যা শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। কারণ এই খাবারগুলো পেট গরম করে,যার কারণে নানা রকমের পেটের অসুখ দেখা যায়। তাই ইফতারে ঝাল এবং মশলাযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে।

আমাদের সবাইকে ইফতারে  কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না তা খেয়াল রাখতে হবে। ইফতারকে খাদ্য উৎসবে পরিণত না করে সুষম খাদ্য খেতে হবে। এতে করে সুস্থ্য-সবল থাকার পাশাপাশি সঠিকভাবে ইবাদাত করাও সম্ভব হবে।