কালোজিরার স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমাদের সবার রান্নাঘরে থাকা উপাদানগুলোর মধ্যে একটি পরিচিত উপাদান হলো কালোজিরা। প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ খাবারের সঙ্গে কালোজিরা গ্রহণ করে আসছে। কালোজিরার বোটানিক্যাল নাম হচ্ছে ‘নাইজিলা সাটিভা’ (Nigella sativa) । বিভিন্ন রোগেরই মহৌষধ এই কালোজিরা।

কালোজিরার মধ্যে রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, লিনোলিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম,ফসফেট, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি ২, নায়াসিন, ভিটামিন-সি, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট।

কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে ৷ চলুন জেনে নেই কালোজিরার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কেঃ

১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

কালোজিরা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোনও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

২। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

কালোজিরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কালোজিরা আমাদের শরীরের LDL Cholesterol এবং ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া কালোজিরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও খুব উপকারী। এটি রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়। এতে করে কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।

৩। ওজন বাড়াতে

কালোজিরা ওজন বাড়াতেও খুব উপকারী। এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। এটি পেটের যাবতীয় রোগ জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়। তাই যারা ওজন বাড়াতে চান, তাদের জন্য কালোজিরা খুব উপকারী।

৪। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে

নিয়মিত কালোজিরা খেলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। এতে করে মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধি ঘটে, যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

৫। দাঁতের ব্যথা দূর করতে

দাঁতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে কালোজিরা। কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা দিয়ে সেই পানিতে কুলি করলে ব্যথা কমে যায়। এছাড়া এটি জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মেরে ফেলতেও সাহায্য করে।

৬। বাতের ব্যথায়

বাতের ব্যাথায় আরাম পেতে, ব্যথার জায়গা ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এক চা- চামচ কাঁচা হলুদের রসের সঙ্গে ১ চা চামচ কালোজিরার তেল ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার খান। ভালো ফলাফল পেতে টানা ২-৩ সপ্তাহ এই পদ্ধতি মেনে চলুন।

৭। ত্বকের ব্রন ও দাগ দূর করতে

কালোজিরার অনেক গুনের মধ্যে একটি হচ্ছে যে এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যারও সমাধান দেয়। লেবুর রস ও কালোজিরা তেল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। লেবুর রস ও কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে দু’বার ত্বকে ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার ত্বকের ব্রণ ও দাগ অদৃশ্য হয়ে যাবে।

৮। চুলপড়া কমাতে

চুল পড়া কমাতেও কালোজিরা বেশ উপকারী। প্রথমে লেবু দিয়ে মাথার স্ক্যাল্প ভালোভাবে ঘষে নিন। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুন। তারপর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পুর্ন মাথায় কালোজিরার তেল মালিশ করুন। খেয়াল রাখবেন যাতে পুরো স্ক্যাল্পেই তেল পৌঁছায়। ১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার চুল পড়া অনেক কমে যাবে।

 

সূত্রঃ ইন্টারনেট