ভিটামিন সি এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি?

ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। এটি দেহে নন-হিম আয়রন শোসন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংযোজক টিস্যু তৈরিতে ও ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ভিটামিন সি ত্বক ও দেহে ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখে।

ভিটামিন সি এর আমাদের স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। চলুন জেনে নেই ভিটামিন সি এর উপকারিতাগুলো-

১। হার্ট ভালো রাখে

এক গবেষণা অনুসারে, ভিটামিন সি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় আরো বলা হয়েছে যে ভিটামিন সি হার্টের জন্য ব্যায়ামের মতই অনেক ভালো।

 ভিটামিন সি রক্তের প্রবাহ বাড়ায় এবং এর ফলে রক্তে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

২। ইমিউনিটি বাড়ায়

ভিটামিন সি এর অভাব হলে দেহে নির্দিষ্ট জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। একটি গবেষণা অনুসারে, ভিটামিন সি জীবের শক্তি ও সুরক্ষা বাড়িয়ে দিয়ে ইমিউনিটি সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। ইমিউনিটি সিস্টেম রক্ষা করার পাশাপাশি, ভিটামিন সি বিভিন্ন এ্লার্জির তীব্রতা হ্রাস করে এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

৩। চোখ ভালো রাখে

ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে চোখের ছানি পরার ঝুঁকি কমে যায়। এই ভিটামিন অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির সঙ্গে গ্রহণ করলে বয়স সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয় ও দৃষ্টিশক্তির কমে যাওয়ার সমস্যা অনেক কমে যায়।

ভিটামিন সি আপনার রেটিনার কোষগুলোর সঠিক কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। এই ভিটামিন আপনার রক্তনালী গুলির স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।

৪। এলার্জির চিকিৎসায়

এলার্জির চিকিৎসায় ভিটামিন সি খুবই কার্যকরী। অতীতে এই ভিটামিন সি হাম, চুলকানী, মামs এবং ভাইরাসঘটিত নিউমোনিয়ার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হত। এখানে অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে ভিটামিন সি এর কার্যকারিতা দেখা যায়। এছাড়াও, যেহেতু ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, তাই এটি ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিকালগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় সহায়তা করে।

 

ত্বকের যত্নে ভিটামিন সি

ভিটামিন সি এর আমাদের ত্বকের জন্যও অনেক উপকারি। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন সি খাওয়ার পাশাপাশি আপনি এটি ত্বকেও ব্যবহার করতে পারেন সিরামের মত এবং উপকারিতা নিতে পারেন।

সিরাম কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে অন্যান্য ক্ষতিকর কারণ যেমন দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে।

 

 

১। রোদে পোড়া থেকে বাঁচায়

ভিটামিন সি এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্যগুলি কোলাজেন সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখে এবং সানবার্ন নিরাময়ে সহায়তা করে। ভিটামিন সি গ্রহণ করা অথবা সাময়িক ভিটামিন সি তেলের প্রয়োগ করে এই পরিস্থিতি উন্নত করা সম্ভব।

তবে এটি মনে রাখতে হবে যে, ভিটামিন সি কেবলমাত্র সানস্ক্রিনের সাথে একসাথে বা পাশাপাশি ব্যবহার করা যেতে পারে, সানস্ক্রিন বাদ দিয়ে ব্যবহার করা যাবে না।

 

২। কোলাজেন উৎপাদনে

হাইড্রোক্সিপ্রোলাইন ও হাইড্রোক্সিলিসিন উৎপাদনের জন্য ভিটামিন সি একটি প্রয়োজনীয় উপাদান, উভয়ই কোলাজেন দ্বারা উৎপাদিত মলিকিউলস গুলো একত্রিত বা আবদ্ধ করতে প্রয়োজনীয়। আর এগুলো আপনার ত্বককে সঠিকভাবে গড়ে তুলে ও ত্বকের টোন ঠিক রাখে।

কোলাজেন ত্বকের গভীর থেকে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে তুলে এবং বয়সের ছাপ দূর করে।

 

৩। ত্বকের গঠন ঠিক রাখে

কোলাজেন দেহে রক্তনালীগুলির গঠন করতে সাহায্য করে। ত্বকের নিচের স্তরে থাকা ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলি অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টি বহন করে যা ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে। পর্যাপ্ত পুষ্টিবিহীন ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে উঠে।

ভিটামিন সি যুক্ত ক্রিমগুলো বাহ্যিক ত্বকের উপস্থিতি ও গঠন উন্নত করে। ভিটামিন সি ইলাস্টিনের গঠন বাড়ায় যা ত্বকের সেলগুলোকে পুরু করে, নিরাময় করে ও প্রতিরক্ষা করে।

 

আমাদের পরিচিত ফল এবং বিভিন্ন শাক–সবজি যেমন: আমলকী, লেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, পেয়ারা, পেঁপে, কাঁচামরিচ— ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। তবে যেহেতু আমাদের শরীর ভিটামিন সি সংরক্ষণ করে রাখতে পারে না তাই প্রতিদিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।