রোজার সময়ে প্রসূতি মায়েদের কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?

 

সন্তান জন্মগ্রহণের পর অনেক নতুন মায়েরই রোজা রাখার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পড়েন। নবজাতকের প্রথম ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের দুধই হল শিশুর প্রধান খাদ্য।  কাজেই নতুন মায়েরা রমজান মাসে বুকের দুধ কমে যাবে বা দুধ একবারেই পাওয়া যাবে না এই ভয়ে রোজা রাখা নিয়ে একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগে থাকেন। কিস্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।  প্রথম ৪০ দিন শেষে চাইলে নতুন মায়েরা রোজা রাখতে পারেন। তবে রোজা রাখার সময় নতুন মায়দের খাবার গ্রহনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে ভাজা পোড়া না খেয়ে পুষ্টি সমৃদ্ধ  সুষম খাবার বেশি খায় তার দিকে বিশেষ  লক্ষ্য রাখতে হবে। 

 

সেহেরিতে মায়ের খাবার:

সেহেরির সময় মায়ের জন্য আমিষ এবং প্রোটিন জাতীয় খাবারের সাথে শাকসবজি রাখতে হবে। সেহেরি করা শেষে করে এক গ্লাস দুধ বা দুধের তৈরি কোনো খাবার এবং যে কোনো একটি মৌসুমি ফল খাওয়া ভাল। সবশেষে পরিমিত পানি পান করবেন। নবজাতকের মায়েরা রোজা রাখার সময় মাথায় রাখতে হবে যাতে রামজান মাসে তাদের সেহেরি কিংবা রাতের খাবার বাদ না যায়। আর রোজায় পরিমাণে অল্প হলেও সুষম আহার গ্রহণ করবেন যেন শরীর পর্যাপ্ত ক্যালরি পায়।

 

ইফতারে মায়ের খাবার

প্রসূতি মায়েদের জন্য ইফতারটাও হবে সকলের থেকে আলাদা। ইফতারের সময় ভাজাপোড়া বা মসলাযুক্ত কোন খাবার না খাওয়ায় ভাল। কারন অনেকসময় মায়ের গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইফতারে খেজুর খাওয়ার পর পরিমিত ভাত, মাছ/মাংস, ডাল ও সবজি, টাটকা মৌসুমি ফল বা তার রস, সবজি বা মুরগির স্যুপ, প্রচুর শরবত, দই, পায়েস, পুডিং ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন। তবে ইফতারির সময় সারা দিন রোজা রাখার পর পেট ভরে খাওয়া পরিহার করা উচিত। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার অল্প অল্প করে গ্রহন করতে হবে। তার সাথে প্রচুর পানি পান করতে হবে। যার ফলে নিজের ও সন্তানের স্বাস্থ্যেও এসময়টায় কোন খারাপ প্রভাব পড়বে না।

 

পর্যাপ্ত ঘুম:

প্রসূতি মাকে রোজার সময়টায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার সাথে সাথে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম যেতে হবে। এত খাবার হজম হতে সাহায্য করবে। ইবাদত ও সন্তান পালন করতে গিয়ে দেখা যায় মায়েদের ঘুমের খুব সমস্যা হয়। কিন্তু এই সময়ে স্তন্যদানকারী মায়ের দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। 

 

 



 

পরিশেষে এটাই বলা চলে নতুন মায়েদের রোজা নিয়ে যতই দ্বিধা দ্বন্দ্বে থাকুক না কেন তারা চাইলে সন্তান জন্মের ৪০দিন পর রোজা রাখতে পারে। শুধুমাত্র সঠিকভাবে সুষম খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং ভাজা পোড়া খাবার থেকে দূরে থাকা। তাহলেই মায়ের সুস্বাস্থ্য এবং নবজাতকের স্বাভাবিক বৃদ্ধির গতি অক্ষুন্ন থাকবে।