এই সামাজিক দূরত্বের সময়ে আপনারা যে ৭টি বই পড়তে পারেন।

বর্তমান অবস্থাই আমরা সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন এমতাবস্থায় আমরা মনে করতে পারি আমাদের ঘরে  বসে কিছুই করার নাই। এই পরিস্থিতে আমরা ঘরে বসে অনেক কিছুই করতে পারি এর মধ্যে বই পড়াও হতে পারে একটি উত্তম পন্থা। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার। তাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, 'ভালো বই কাকে বলে?' উত্তরে তিনি বলেছিলেন, 'যে বইটা পাঠককে ভাবায়, সেটাই ভালো বই। পাঠকদের কাজ হল বই পড়া। বইয়ের মধ্য থেকে নিজের জন্য আনন্দ খুজে ফেরা।

আমাদের এই সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে আপনি যে বই গুলো পড়তে পারেন তা হচ্ছেঃ

১। ফেলুদা সমগ্র - লেখক সত্যজিৎ রায়। ফেলুদা পড়ে হতাশ হয়েছে এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। যারা মাথা খাটাতে পছন্দ করে তাদের খুব ভাল লাগবে এই বইটি। কারণ ফেলুদা শুধু পড়ে সময় কাটানোর জন্য নয়, ফেলুদা পড়ে নিজের মাথাটিও খুব ভালোভাবেই ব্যবহার করা যায়। ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্টির বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। 'ফেলুদা সমগ্র ১' বইটিতে পাবেন রহস্য ও উত্তেজনায় ভরপুর ১৬টি গল্প। যার প্রতিটিতেই পাবেন একটু হাসি, একটু রোমাঞ্চ আর অনেকখানি রহস্য!  

২। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ- লেখক আরিফ আজাদ। এটা এমন একটি বই যার ব্যাপারে না বললেই নয়। বইটির প্রত্যেকটি কথা আপনার হৃদয়ে বুলেটের মত গেঁথে যাবে।  গল্পের আঙ্গিকে, যুক্তি এবং বিজ্ঞানের আলোকে সংশয়বাদীদের মাঝে প্রচলিত সকল প্রশ্নের জবাব তিনি লিখেছেন বইটিতে। ইতিপূর্বে পাঠক সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এই বই। ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে মানুষ দলে দলে কেনা শুরু করে বইটি। 

৩। আমি তপু- জাফর ইকবাল স্যারের লেখা অন্যতম সেরা বই এটি। ‘আমি তপু’ গল্পের শুরু হয় আরিফুল ইসলাম তপুর নামে একজন কিশোরের নিজ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এক দুর্ঘটনায় তপু তার বাবাকে হারায় এবং তা মূলতঃ ছেলেটির গোটা জীবনটাকেই উলটপালট করে দেয়। স্বামীর মৃত্যুতে তপুর মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং স্বামীর মৃত্যুর জন্য নিজের ছেলে তপুকেই দোষারোপ করতে থাকে। ফলে তপুর জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের লেখা সেরা কিশোর উপন্যাসগুলোর তালিকা যদি করতে হয়, এবং সেই তালিকা যত ছোটই হোক না কেন তাতে 'আমি তপু'র থাকবেই।

৪। হিমু- বাংলাসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। আর তার তৈরি অন্যতম একটা চরিত্র হলো হিমু। বইপোকাদের মধ্যে হিমু কে চিনেন না এমন পাঠক পাওয়া যাবে না। হিমু এক রহস্য মানব। যাকে পাঠকের পক্ষে কখনো উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। হুমায়ুন আহমেদ হিমু চরিত্রের মধ্যে দিয়ে পাঠকদের মধ্যে দিয়ে যেমন বিনোদন দিয়েছেন তেমনি অসংখ্য সত্য কথা পওছে দিয়েছেন সহজ ভাষাই। বইটি এখনও যারা পড়েননি তারা অবশ্যই বইটি পরবেন। 

৫। ব্যোমকেশ সমগ্র- বইটি লিখেছেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যোমকেশ কোন পুলিশ কর্মকর্তা নন, কিংবা নন কোন গোয়েন্দা বিভাগের কোন হর্তাকর্তা। খুব সাধারণ একজন মানুষ; যে কি না শখের বসে সত্য অন্বেষণ করে। অন্যান্য ডিটেকটিভদের সাথে ব্যোমকেশের পার্থক্য এখানেই। অন্য ডিটেকটিভরা যেখানে খুনী কিংবা অপরাধী ধরার জন্য বদ্ধ পরিকর, ব্যোমকেশ সেখানে খুঁজছে আসলে ঘটনা কি হয়েছিল, কেন হয়েছিল। এই ধারাবাহিকতা নিয়েই রচিত হয়েছে প্রতিটি গল্পের দৃশ্যপট।

 

৬। দ্য আর্ট অব ওয়ার- লেখকঃ সানজু. ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ সর্বকালের সেরা একটি বইয়ের টাইটেল হিসেবে স্বীকৃত। একটা বই একশো বছর চললে সেটা ক্লাসিক বলা যায় সহজেই। আর যে বই আড়াই হাজার বছর ধরে চলছে বুঝতে হবে এটা কাল জয় করে ফেলেছে। এত বছর ধরে মানুষের সম্মান ও আকর্ষন কেড়ে নেওয়ার পেছনে সারবত্তা কিছু আছে সেটা বলাই বাহুল্য। দ্য আর্ট অব ওয়ার জনপ্রিয় হওয়ার কারণ এটি অত্যন্ত ছোট। ৪০ মিনিটের একটা বিমানের ফ্লাইটেও অনায়াসে পড়ে ফেলতে পারেন বইটি। বইটির উপর কয়েক ঘন্টা বিনিয়োগ হয়তো পাল্টে দিতে পারে আপনার জীবনের গতিপথ।

৭। মুক্ত বাতাসের খোঁজে -লেখকঃ লস্ট মডেস্টি ব্লগ আর সম্পাদক- আসিফ আদনান। বইটা আসলেই ভাল মানের, কিছু জিনিস যা আমরা কখনো ওভাবে ভাবি না, স্কিপ করে যাই সবসময়, এই বইটা আপনাকে সেসব ভাবনাকে জাগ্রত করবে, স্কিপ করা জিনিস গুলোকে নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে সাহায্য করবে, এবং অবশ্যই আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে কোনটা আপনার, আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের ভালো বা খারাপ যা এতদিন ছিল উপেক্ষিত। জীবন বদলে দেয়ার মত একটা বই। এই বইটি অনততো একবার হলেও কিশোর এবং তরুণদের পড়া  উচিত।