গর্ভবতী মায়েদের রোজা নিয়ে যত প্রশ্ন

 

বছর ঘুরে চলে এল আবার রমজান মাস। এই মাসে রোজা রাখা ফরয। কিন্তু গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে রোজা নিয়ে অনেক ধরনের প্রশ্ন আসে। কেউ বলে রোজা রাখা যাবে আবার কেউ বলে যাবে না। তবে প্রকৃতপক্ষে রোজা রাখা যাবে কি যাবে না তা নির্ভর করে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ও গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্যে উপর। 

 

ধর্মীয় মতামতঃ

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা না রাখা নিয়ে অনেক মতাভেদ রয়েছে। তবে ইসলামের নিয়মানুসারে,পবিত্র রমযান মাসে আল্লাহ্‌ তালার নির্দেশে গর্ভবতী মায়েদের রোজা রাখার উপর শিথিলতার কথা উল্লেখ আছে।

 

রোজা রাখার ব্যাপারে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়ঃ 

  • প্রথমত, একজন গর্ভবতী নারী শারীরিকভাবে কেমন অবস্থায় আছেন তার উপর নির্ভর করে রোজা রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যদি গর্ভবতী মায়ের শরীরি অসুস্থ বোধ করে তবে রোজা রাখা উচিত নয়। কারন এতে তার এবং তার অনাগত শিশুর ক্ষতি হতে পারে।

 

  • দ্বিতীয়ত, রোজা রাখার সময়কাল শীতকাল নাকি গরমকাল? যদি গরমকাল হয়, তাহলে গরম আবহাওয়ায় গর্ভবতী মায়ের পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। যা গর্ভবতী মায়ের ও গর্ভের শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।

 

  • গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক কোন সমস্যা না থাকে এবং সুস্থ থাকে তা হলে সে রোজা রাখতে পারবে। কারণ, তিনি যতক্ষণ রোজা রাখবেন ততক্ষণ তার গর্ভের শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি তার শরীরে মজুদ থাকে।

 

রোজা রাখার আগে গর্ভবতী মায়ের পূর্ব প্রস্তুতিঃ

  • রোজার রাখার  ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সর্বপ্রথম একজন গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 

  • ডায়াবেটিস, অ্যানেমিয়া এবং প্রি-অ্যাকলেমপসিয়া আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে। ডায়াবেটিস যদি থেকে থাকে তবে রোজা রাখাকালীন সময়ে রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যেতে পারে তখন গর্ভবতী মা ও শিশু মারাত্মক ঝুঁকি পরতে পারে। এছাড়া অ্যানেমিয়া আক্রান্ত মায়েরা শারিরিক দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন, তাই অতিমাত্রায় অ্যানেমিয়া আক্রান্ত মায়েদের গর্ভাবস্থায় রোজা না  রাখাই ভাল।

 

  • রোজা শুরুর পূর্বে একজন পুষ্টিবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট প্ল্যান তৈরি করে রাখতে পারলে ঐ সময়ে গর্ভবতী মায়ের শরীরে পুষ্টি মান অটুট থাকে।

  • রমজান শুরুর পূর্ব থেকেই কফি, চা (এমনকি গ্রিন টি) এবং চকোলেট খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। কারণ এগুলোতে ক্যাফেইন থাকে, যার ফলে গর্ভবতী মায়েরা  রোজার সময় পানি শূন্যতায় ভুগতে পারেন।

 

রোজা নিয়ে একজন গর্ভবতী মায়ের অনেক চিন্তা থাকে কারণ একদিকে ধর্মীয় মনোভাব আর অন্যদিকে রোজা নিয়ে গর্ভের সন্তানের সুস্থতা নিয়ে ভাবনা। কিন্তু এসব কিছু নির্ভর করে গর্ভবতী মায়ের উপর। একজন গর্ভবতী মা যদি ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে সুস্থভাবে এবং রুটিন মাফিক ভাবে সচেতনতার সাথে রোজা রাখতে পারবে। তাই পরিশেষে, রোজা রাখবে কি রাখবে না তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে গর্ভবতী মায়ের এবং তার গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর।