গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে একজন নারী প্রায় ৯ মাস পিরিয়ডমুক্ত থাকেন। এই সময়ে পিরিয়ড এর যন্ত্রনা থেকে মুক্ত থাকলেও বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর আবার ফিরে আসে এই ঋতুচক্র। মেয়েরা সন্তান প্রসবের পর প্রথম পিরিয়ড নিয়ে একটু চিন্তিত থাকেন। আর অনেকের ক্ষেত্রেই প্রসবের পর প্রথম পিরিয়ড মনে হতে পারে একটু অন্যরকম। এসময় অনেকের পিরিয়ড আগে শুরু হয় অনেকের দেরি করেও হতে পারে। তবে এটা খুব চিন্তার বিষয় নয়। অনেকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে চান না তাই মনে সংকোচ থাকলেও অনেক বিষয় রয়ে যায় অজানা। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
ডেলিভারির কতদিন পর শুরু হতে পারে পিরিয়ড : সাধারণত প্রসবের ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে মেয়েদের নরমাল মাসিক শুরু হয়। যেসব মায়েরা বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ান না তাদের ডেলিভারি হওয়ার ৬-৮ সপ্তাহ পরে তাদের পিরিয়ড শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যদি বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের খাওয়ানো হয় সেক্ষেত্রে সময়টা বদলে যেতে পারে।
বুকের দুধের সাথে পিরিয়ডের সম্পর্ক: বুকের দুধ তৈরী হওয়ার সময় মায়ের শরীর থেকে প্রোলাক্টিন হরমোন নামক হরমোন নিঃসরণ হয়। আর দেহে প্রোল্যাক্টিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা ডিম্বস্ফুটনের বিলম্ব ঘটায় ফলে মায়ের ওভুলেশন হয় না যার ফলে মাসিক বা পিরিয়ড বন্ধ থাকে। তাই বুকের দুধ খাওয়ানো কিংবা না খাওয়ানোর উপরেও পিরিয়ড অনেকটা নির্ভর করে। আপনি যদি শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ান তাহলে প্রোল্যাক্টিনের মাত্রা হ্রাসের কারণে পিরিয়ড তাড়াতাড়ি হতে পারে।
ডেলিভারির আগের ও পরের পিরিয়ড: ডেলিভারির পরে যখন আবার নতুন করে পিরিয়ড শুরু হয় তখন অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন:
১. আগের থেকে বেশি ব্যথা বা তলপেটে টান অনুভব হয়।
২.অনিয়মিত ব্লিডিং শুরু হয়ে আবার বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৩.অতিরিক্ত মাত্রায় ব্লিডিং হওয়া।
৪.প্রত্যেক মাসে মাসিক নিয়মিত হতেও সময় লাগা।
৫.ডেলিভারির পর থেকে মেয়েদের জরায়ুর দেওয়াল আগের থেকে মোটা হয়ে যায় তাই তলপেটে ক্র্যাম্প বেশি হয়।
এই সময় মায়েদের উচিত নিজের সঠিক যত্ন নেয়া, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। মায়েরা সতর্ক থাকুন এবং কোনো জটিলতা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।