ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে প্রায়ই এখন শোনা যাচ্ছে ডাবল ক্লিনজিং এর কথা। আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা ডাবল ক্লিনজিং আসলে কি? ডাবল ক্লিনজিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে মুখ দুইবার পরিষ্কার করতে হবে। তবে তা বলে সাবান বা ফেইসওয়াশ দিয়ে দুইবার মুখ পরিষ্কার করাকে ডাবল ক্লিনজিং বলে না। ডাবল ক্লিনজিং করতে হয় দুই ধাপে। কোরিয়ানরা প্রথমে ডাবল ক্লিনজিং মেথডটি শুরু করে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে করবেন এই ডাবল ক্লিনজিং এর বিস্তারিত।
ডাবল ক্লিনজিং আসলে কী?
আমরা অনেকেই শুধু পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলি, কিন্তু সেটা যথেষ্ট না। সারাদিনের ধুলো বালি শুধুমাত্র পানি দিয়ে বা শুধু একটা ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলেই যাবে না। তাই ত্বক কে গভীর থেকে পরিষ্কার করতে এবং ভারি মেইকআপ তোলার জন্য ডাবল ক্লিনজিং পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। ডাবল ক্লিনজিং মানে একই ফেইসওয়াশ দিয়ে দুইবার মুখ ধোয়া নয়। বরং প্রথমে শুকনো ত্বকে আলতো করে মাখা হয় তেল বা তেলযুক্ত একটি ক্লিনজার। এতে মুখ থেকে মেকআপ তোলা সহজ হয়। এরপর ক্রিম বেজড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে হবে যাতে মেকআপের শেষ অংশটাও উঠে আসে। সারাদিন মেকআপ দিয়ে থাকার পর রাত্রে ডাবল ক্লিনজিং করা হয়। আর ডাবল ক্লিনজিং এর শেষে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। সকালে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
ডাবল ক্লিনজিং এর উপকারিতা কী?
ত্বকের অসম ভাব এবং ময়লা দূর করতে এবং ত্বক থেকে নিখুঁতভাবে মেকআপ ও অন্যান্য প্রসাধনী দূর করতে ডাবল ক্লিনজিং অনেক কার্যকরী। ক্লিনজিং করার পর ত্বক অনেকটাই কোমল হয়ে ওঠে। এতে ত্বকে ব্রণের উৎপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
সব ধরনের ত্বকেই কী ডাবল ক্লিনজিং করা যায়?
অনেকেই ভাবছেন, যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ তৈলাক্ত ত্বকে আর তেল দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু তেল এক্ষেত্রে চুম্বকের মতো কাজ করে। তা ময়লা ও মেকআপ টেনে তুলে ফেলে ত্বক থেকে। ফলে তেল ধুয়ে ফেললে ত্বক আগের তুলনায় বেশি ফ্রেশ হয়ে যায়। আর ক্রিম ক্লিনজার ব্যবহার করলে ত্বক আরও উপকৃত হয়। সকল ধরনের ত্বকেই ডাবল ক্লিনজিং করা যায়।
কিভাবে করবেন ডাবল ক্লিনজিং
প্রথম ধাপ: অয়েল ক্লিনজিং
ত্বকের সঙ্গে মানানসই তেল মিশ্রিত ক্লিনজার পর্যাপ্ত পরিমাণে কপালে, গালে, নাকে এবং থুতনিতে নিয়ে ভালোভাবে শুকনো ত্বকে আলতোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। মুখে আঙুল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করলে মেইকআপ এবং জমে থাকা ময়লা উঠে আসবে। কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চোখ এবং ঠোঁটের মেকআপ উঠাতে , অয়েল ক্লিনজার ব্যবহারের আগে মেইকআপ রিমুভার দিয়ে মেইকআপ উঠিয়ে নিতে পারেন।
দ্বিতীয় ধাপ: ফোম ক্লিনজার
সামান্য পরিমাণে ক্লিনজার হাতে নিয়ে ঘন ফেনা তৈরি করতে হবে। এই ফোম পুরো মুখে এবং গলায়, কপালে এবং নাকের ত্বকে ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। খেয়াল রাখবেন মুখে যেন বেশি ঘষাঘষি না করা হয়।
এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। কপালের কাছে চুলের অংশও ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সব শেষে নরম তোয়ালে দিয়ে শুকনা করে মুখ মুছে নিতে হবে।
সবশেষে আপনার ত্বকে অবশ্যই ভালো মানের পর্যাপ্ত পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার লোশন বা ক্রিম লাগিয়ে নিন। নতুবা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে এবং আর্দ্রতা হারাবে।