মশা তাড়াবে যেসব গাছ

 

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই দেশে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়েছে। তাই সব সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন মশা না কামড়ায়। অনেকেই মশা দূর করতে স্প্রে, কয়েল, লিকুইডেটর ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ খুব কমই হয় বরং এতে শরীরের ক্ষতি হয় বেশি। মশা তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ একটি উপায় হলো গাছ লাগানো। কয়েকটি গাছ আছে যা বাড়িতে রাখলে মশা আর আসবে না। চলুন জেনে নেই গাছগুলো সম্পর্কে –

বাসিলঃ

বাসিলকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় ওসিমাম বেসিলিকম বলে। মুখরোচক খাবারের সাথে শুকনো মসলা হিসেবে এর ব্যবহার বেশি হলেও মূলত বাসিল একটি ওষুধি উদ্ভিদ। জমিতে শাক-সব্জির পাশাপাশি ঘরের আঙিনায়, বাগানে বা ছাদে অন্যান্য গাছপালার সাথে এটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। আবার টবেও লাগানো যায়। এর একটি তীব্র ভেজা গন্ধ পোকামাকড়কে ঘরবাড়ির আঙিনা আর বাগান থেকে দূরে রাখে। আপনার বাসায় বাসিল গাছ থাকলে তা আপনাকে মশা থেকে সুরক্ষিত রাখবে।

ল্যাভেন্ডারঃ

বাড়িতে ল্যাভেন্ডার গাছ থাকলে খেয়াল করে দেখবেন, এর পাতার কাছে কোনো পোকাই বসে না। তার কারণ ল্যাভেন্ডারের গন্ধ। এই গাছের পাতায় একধরনের এসেনশিয়াল তেল থাকে। তাই এর সুতীব্র গন্ধে গাছ ও তার আশপাশে আসতে পারে না মশা। তাই অনেকে ল্যাভেন্ডারের গন্ধযুক্ত সুগন্ধিও ব্যবহার করে থাকেন।

লেমনগ্রাসঃ

মশা তাড়াতে এই গাছ খুব কার্যকরী। আর বাগানে একবার লাগিয়ে দিলে খুব একটা যত্নেরও প্রয়োজন পড়ে না। রোদ পড়ে আর পানি জমে না এমন জায়গায় এই গাছ লাগান।

পুদিনাঃ

পুদিনা বা মিন্ট হচ্ছে মেন্থল প্রজাতির একটি ওষুধী উদ্ভিদ। এর খাঁটি তাজা গন্ধ যেমন মুখে সুবাস ছড়ায় তেমনি এটা দিয়ে তাড়ানো যায় মশা। মেন্থলের পাতার রসে যে তীব্র ঘ্রাণ সেটাই মশা ও পোকামাকড়কে দূরে সরিয়ে রাখে। এটা বারান্দায় বা বাগানে আদ্র মাটি ও নিষ্কাশন উপযোগী একটি পাত্রে উৎপাদন করা সম্ভব। একে সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে রাখা হয়।

গাঁদাঃ

গাঁদা ফুলের গন্ধে শুধু মশা নয়, যে কোনো পোকা-মাকড়ই এর ধারে কাছে ঘেঁষে না। তাই বাড়ির চারপাশে বা বেলকনিতে গাঁদা ফুল গাছ লাগান। দূরে থাকবে মশা, মাছি, পোকা-মাকড়। একইসঙ্গে বাড়বে বাড়ির শোভাও!

রোজ়মেরিঃ

বাসিল ও মিন্টের মতো রোজ়মেরিও রান্নাঘরের খুব চেনা একটি উপকরণ। এই গাছ ঘরের ভিতরে টবে বা বাইরে বাগানে লাগানো যায়। বিশেষ যত্নের দরকার হয় না। পোকামাকড় তাড়াতে রোজ়মেরির পাতা শুকিয়ে ঘরে রাখতে পারেন। এর থেকে তেলও বের করে নিতে পারেন। নাহলে, রোজ়মেরি স্প্রে বানিয়ে ছড়াতে পারেন সারা বাড়িতে।

ক্যাটনিপঃ

ক্যাটনিপ হচ্ছে সবচাইতে কার্যকরী মশা প্রতিরোধক। ক্যাটনিপে থাকা নিপিটাল্যাকটন নামক রাসায়নিক পদার্থ মশা তাড়াতে ভূমিকা রাখে।

রসুনঃ

রসুন শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না, একই সঙ্গে দ্রুত ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে। কিন্তু জানেন কি, বাড়িতে রসুন গাছ লাগালে মশার উপদ্রব থেকেও সহজে মুক্তি পাওয়া যায়! বিশ্বাস না হলে বাড়িতে রসুন গাছ লাগান আর ফল পান হাতেনাতে।

তুলসীগাছঃ

ঘরের আঙিনায় তুলসীগাছ লাগানোর রীতি বহু পুরোনো। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি তুলসীর একাধিক স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদিক গুণও আছে। তুলসীগাছ পরিবেশকে জীবাণুমুক্ত ও বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর ঝাঁজালো গন্ধ মশা দূর করে। এ ছাড়া তুলসীর রস প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন পানি এবং প্রয়োজনীয় সার ব্যবহারে সহজেই এজাতীয় গাছ বাঁচে।

 

এছাড়া ঘাস প্রজাতির উদ্ভিদ সাইট্রোনেলা ও লেমন বাম জাতীয় কিছু গাছও মশা দূরে রাখতে বেশ কার্যকরী। যেকোনো নার্সারিতে আপনি এই গাছগুলো সাধ্যের মধ্যেই পেয়ে যাবেন।