রোযা রেখে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ালে বাচ্চার কোনো ক্ষতি হয় না কেননা রোযা রাখলেও শরীর আগের মতই দুধ উৎপন্ন করবে। যেসব মায়েরা রোযা রেখে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে চান তারা রোযা রাখায় তেমন কোনো অসুবিধা নেই যদি তিনি নিজের যত্ন সঠিকভাবে নিয়ে থাকেন। কিন্তু সঠিক নিয়ম মেনে না চললে হতে পারে বিপত্তি। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক ব্রেস্ট ফিডিং মায়েরা রোযা রাখতে চাইলে কি কি বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে-
১। রোযা রেখে দুধ খাওয়ালে মায়ের ওজন সপ্তাহে ১ কেজি করে কমতে পারে কিন্তু এতে বুকের দুধের কোনো তারতম্য হবে না। কিন্তু ওজন বেশি কমে গেলে বা পানি শূন্যতা দেখা দিলে তখন অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
২। ব্রেস্ট ফিডিং মায়েরা পানি বেশি বেশি খাবেন। বুকের দুধ উৎপাদনেও পানির চাহিদা অপরিসীম। তাই ইফতারের পর থেকেই অল্প অল্প করে পানি পান করতে থাকুন। পানি ভালো না লাগলে ফলের রস পান করুন। তবে, অন্য সময়ের চাইতে বেশি পানি পান করতে হবে আপনাকে।
২। ব্রেস্ট ফিডিং মায়ের ইফতারটাও হবে সবার চেয়ে আলাদা। ভাজা পোড়া বা মসলাযুক্ত কোনো খাবার খাবেন না মোটেও। বরং স্বাভাবিক সময়ে দুপুরে যে খাবারটি খেতেন, সেই খাবারটিই খাবেন ইফতারে। অর্থাৎ, পরিমিত ভাত, মাছ/মাংস, ডাল ও সবজি, ডিম, ও সালাদ খান। সাথে টাটকা ফলের রস ও শরবত।
৩। অনেকেই ইফতারের পর রাতের খাবার খান না, অনেকেই আবার আলসেমী করে সেহেরি বাদ দেন। ভুলেও এই কাজটি করা যাবে না। মাকে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টায় ৩ বেলা সুষম খাবার খেতে হবে। তাই পরিমাণে অল্প হলেও ইফতার বা সেহেরি বাদ দেবেন না।
৪। এছাড়াও মাকে অবশ্যই এমন কিছু খাবার খেতে হবে যা তাঁর বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। যেমন লাউ, কালিজিরা, সবুজ শাকসবজি, তাজা ফল ইত্যাদি।
৫। মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমাতেও হবে। ইবাদত ও সন্তান পালন, এই দুই মিলিয়ে দেখা যায় মায়েদের ঘুমের খুব সমস্যা হয়। কিন্তু এই সময়ে ব্রেস্ট ফিডিং মায়ের দরকার পর্যাপ্ত ঘুম।
৬। ঘরের যে কোনো ধরনের পরিশ্রমের কাজ সেহরির আগেই সেরে ফেলুন, দিনের বেলা যথাসম্ভব বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।
৭। দৈনিক এক গ্লাস দুধ অবশ্যই পান করতে হবে আর সুষম জাতীয় খাবার এবং ফলমূল বেশি বেশি খেতে হবে।
৮। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস আছে, তাঁরাও খাদ্যাভ্যাসের কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। ওষুধের নিয়মের কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। ওষুধের সময়টা তিন বেলার জায়গায় দুই বেলা করে নিতে পারেন। ইনসুলিনও দুই বেলা করে নিতে পারেন।
সর্বোপরি, সুস্থ থাকতে এবং যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।