রোজার সময় কখন কিভাবে ব্যায়াম করবেন

 

রমজান মাসে আমাদের দৈনন্দিন কাজেরও কিছু পরিবর্তন আসে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ এ সময়টায় ঘরে একটু বিশ্রামে থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু এ সময় কোনোরকম অলসতা বাদ দিয়ে আমাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে হবে। রোজার সময় ব্যয়াম করা যাবে নাকি এ নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। অনেকেই মনে করে থাকেন যে রোজা রেখে ব্যায়াম করা যাবে না যা একটি ভুল ধারণা।শারীরিক কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে রোজার সময় শরীরের সুস্থতার জন্য হালকা-পাতলা ব্যায়াম করা উচিত। রমজান মাস হলো অন্যান্য সকল মাসের চেয়ে উত্তম এবং রহমতের মাস। রোজা রেখেও ব্যায়াম করা যাবে। কিন্তু অবশ্যই সেটা কোন সময়ে করা হচ্ছে এবং কতটা সময় ধরে করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। রোজার সময় সাধারণতো হালকা ব্যায়াম করাই ভালো | কারণ সারাদিন রোজা রেখে শরীর দুর্বল থাকে। তাই এ সময় দুর্বল শরীরে বেশি চাপ না দিয়ে হালকা ব্যায়াম করতে হবে। 

রোজার সময় কখন ব্যায়াম করবেন : 

রোজার সময় দিনের শেষভাগে যখন তাপমাত্রা কমে যায় তখন ব্যয়াম করতে পারেন। তাছাড়া ইফতার ও রাতের খাবারের মধ্যবর্তী সময় হলো ব্যায়ামের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।ভারী খাবার খেয়ে ব্যায়াম করা যাবেনা। এতে করে শরীর খারাপ করতে পারে। যারা অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন তারা রাত ১১ টা থেকে ২ টার মধ্যে ব্যয়াম করতে পারেন। কিংবা যারা সেহেরির সময় একটু আগে ঘুম থেকে ওঠেন তারা সেহেরি খাওয়ার আগে ব্যায়াম করতে পারেন। এ সময়  রাতের খাবার থেকে শরীরে শক্তি যেমন পাওয়া যায় তেমনি পাকস্থলীও খালি থাকে।যার ফলে  ব্যায়াম শেষে এ সময় পরিপূর্ণ ভাবে খাদ্য গ্রহণ করে নিতে পারবেন। এতে করে সারাদিন শরীরও তরতাজা থাকবে।

রোজার সময় কি  ব্যয়াম করবেন 

 ইফতার গ্রহণের এক থেকে দুই ঘণ্টা পর হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন।

রোজার সময় কোনোরকম ভারী ব্যয়াম করা যাবেনা। এসময় হালকা ব্যয়াম করার চেষ্টা করবেন। ইফাতারের পরে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর হালকা  হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।  সকালবেলা ঘুম ভাঙার পরে বিছানা থেকে না উঠে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করুন। পাশাপাশি  মনকে চিন্তামুক্ত রেখে বালিশ ছাড়া চিত হয়ে হাত-পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে শবাসন করুন। এতে করে শরীরে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাছাড়া অনেক পরিশ্রম ও মানসিক চাপ সহ্য করা যায় এবং দেহের যে কোনো ব্যথা ও লুকানো সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে। এগুলোর পাশাপাশি ট্রেডমিলে হাঁটা, সাইকেল চালানো এবং কিছু ফ্রি-হ্যান্ড এবং ইয়োগা করতে পারেন। যে ব্যায়ামগুলো করলে খুব বেশি ঘাম হয়, রোজার সময় সেসব ব্যয়াম না করাই ভালো।

ব্যয়াম করলে  কেবল শরীর নয়, মনও সুস্থ-সবল ও সক্রিয় রাখা যায়।তাই রোজার মাসেও নিয়মিত ব্যয়াম করা উচিত। নিয়মকানুন মেনে সঠিকভাবে ব্যয়াম করলে রোজার মাসেও ফিট থাকা সম্ভব। 

তবে খেয়াল রাখতে হবে বেশি তেল বা ঘিয়ে ভাজা খাবারদাবার না খেয়ে দই, চিড়া, ছোলা, শসার সালাদ, ফলমূল ইত্যাদি খেয়ে তারপর ব্যয়াম করতে এতে করে শরীর খারাপ লাগবে না।

ব্যায়ামের জন্য উপযুক্ত কাপড় বাছাই করে নিবেন। খুব বেশি ভারী কাপড় পরে ব্যায়াম করবেন না। কারণ ব্যায়াম করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখাটা জরুরি। তাছাড়া হৃদ্‌রোগী ও ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজার সময় ব্যয়াম করতে পারেন।