শিশুদের ডায়াবেটিস ও তার লক্ষণসমূহ

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। ডায়াবেটিস মূলত ২ ধরণের হয় – টাইপ ১ এবং টাইপ ২। উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্লাড সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে যায়। তবে এই ২ টাইপের ডায়াবেটিসের কাজের ধরণ আলাদা।

 

টাইপ ১ ডায়াবেটিস

টাইপ-১ ডায়াবেটিস এমন একটি অবস্থা যখন অগ্ন্যাশয়ের দ্বারা ইনসুলিন খুব কম উৎপন্ন হয় বা কোন ইনসুলিনই উৎপন্ন হয় না। ইনসুলিনের অভাবে, দেহ শর্করা (আমাদের খাবারে যা থাকে) ভাঙতে অক্ষম হয় এবং তাই শর্করা রক্ত ​​প্রবাহে থেকে যায়। সুতরাং, রক্তে শর্করার মাত্রা সর্বোচ্চ স্তরের উপরে উঠে যায়, যা আমাদের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে।

রোগটি সাধারণ ভাবে শৈশব বা বয়ঃসন্ধিকালে দেখা গেলেও প্রাপ্তবয়স্কদেরও টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়।

 

টাইপ ২ ডায়াবেটিস

টাইপ ২ ডায়াবেটিস হলে শরীরের সুগার (গ্লুকোজ) লেভেলের ওপরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। এই রোগ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতাকে বাধা করে।

একে প্রাপ্তবয়স্ককালীন ডায়াবেটিস বলে কারণ, মূলত বয়স্ক লোকেরাই এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে আজকাল বহু শিশু এই রোগের শিকার।

 

টাইপ ১ ডায়াবেটিস কাদের হয়

এটি প্রায়শই শিশুদের মধ্যে পাওয়া যায়, কখনও কখনও জন্মের পরেও। এটিকে অটোইমিউন ডিজিজ হিসাবেও শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, কারণ এটি আমাদের নিজস্ব দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যকর কোষগুলি ধ্বংস করে ফেলে। এই ধরণের ডায়াবেটিসটিকে “জুভেনাইল ডায়াবেটিস”, “ইনসুলিন-বেসড ডায়াবেটিস মেলিটাস অফ চিলড্রেন”, “ব্রিটেল ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন” এবং “সুগার ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন” হিসাবেও উল্লেখ করা হয়।

 

টাইপ-১ ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলি কি কি?

একজন ব্যক্তির অজান্তেই ডায়াবেটিস হতে পারে কারণ এর লক্ষণগুলি সর্বদা সুস্পষ্ট হয় না এবং এগুলো প্রকাশ পেটে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করেই টাইপ ১ ডায়াবেটিসের লক্ষন দেখা দিতে পারে।

শিশুদের মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির জন্য সতর্ক হওয়া এবং লক্ষ্য রাখা জরুরী:

  • ঘন ঘন মূত্রত্যাগ
  • খুব তৃষ্ণা লাগা
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাওয়া বা এমনকি লক্ষণীয় ওজন হ্রাস
  • অস্বাভাবিক ক্লান্ত লাগা
  • বমি বমি ভাব
  • বিরক্তি বোধ করা
  • দ্রুত শ্বাস ফেলা বা অজ্ঞান হয়ে পড়া।

 

সূত্রঃ কিডসহেলথ