আপনার ত্বক কে কিভাবে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট গুলো লেয়ার করে নিবেন


আমরা সবাই কমবেশি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করি কিন্তু আমরা সবাই সঠিক পদ্ধতি মেনে চলিনা যার কারণে দেখা যায় আমাদের স্কিন সব প্রয়োজনীয় জিনিস পাচ্ছে না। আপনারা সবাই হয়ত জানেন না যে বিভিন্ন প্রোডাক্টে বিভিন্ন ধরণের মলিকিউল সাইজ আছে। যেমন সিরামের মলিকিউল সাইজ ময়েশ্চারাইজার থেকে ছোট। কিন্তু তেলের মলিকিউল সাইজ সব থেকে শক্তিশালী যার কারণে এর পরে যদি আপনি কোন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টও ব্যবহার করেন আপনার স্কিন তখন ওই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট গুলোর কোন প্রয়োজনীয় জিনিস পায় না। ফলে আপনি যা ব্যবহার করছে তা বৃথা যায়।

তাই সাধারণ নিয়ম হচ্ছে সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার ত্বকে হাল্কা কোন পণ্য ব্যবহার করতে হবে যা আপনার ত্বক সহজেই শুষে নেয়। কিন্তু একটি জিনিস আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে তা হচ্ছে প্রতিটি লেয়ারের স্কিন কেয়ার পণ্য আপনার ত্বকে ব্যবহার করার পর কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে যাতে আপনার স্কিন ওই পণ্য গুলো সঠিক ভাবে যাতে শুষে নিতে পারে।

এখন আমরা জেনে নিব ধাপ গুলো। আপনি সকালে এবং ঘুমানোর আগে আপনার ত্বক কে কিভাবে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট গুলো আপনার ত্বকে লেয়ার করে নিবেন।

 

ধাপ ১ঃ ক্লিনজার

সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোন জেনটল ক্লিনজার ব্যবহার করুন। কারণ যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের ত্বকে অনেক জীবাণু প্রবেশ করে, তা ছাড়াও আমাদের ত্বকে দেখা দেয় নানা ধরণের ময়লা, তেল এবং ইমপিউরিটিস। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্লিনজার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। আর রাতে যদি আপনি মেকআপ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাবল ক্লিনজিং ব্যবহার করতে হবে। সর্ব প্রথমে ক্লিনজিং অয়েল দিয়ে আপনার ত্বক থেকে মেকাপ গুলো উঠিয়ে নিতে হবে। আর ক্লিনজিং অয়েল সবচাইতে ভালো পদ্ধতি যা আপনার মেকাপের কেমিক্যাল দূর করবে ও ত্বকে পুষ্টি যোগাবে। ক্লিনজিং অয়েলের মাধ্যমে মেকাপ পরিষ্কারের সময় আপনাকে এমন জেল ক্লিনার ব্যবহার করতে হবে যা আপনার স্কিন টাইপের জন্য প্রযোজ্য।

রাতে ও সকালে আমরা অবশ্যই এই পদ্ধতি মেনে চলতে ভুলবেন না।

 

২ঃ টোনার

টোনার আপনার ত্বকের মেকাপ এবং ধুলাবালি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া ত্বকে যদি মিনারেল বা ক্লোরিন লেগে থাকে তবে সেগুলো ও দূর করে।  আর টোনিং এর মাধ্যমে আপনার ত্বকের পোরস গুলো ও টাইট হবে এবং আপনার স্কিনের PH লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।

টোনার ব্যবহারের পর অনেকেই আছে যারা এসেন্স বা স্পট ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করে থাকেন। যারা এসেন্স বা স্পট ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তারা টোনারের পর এই ধাপ টি মেনে চলতে পারেন।

৩ঃ সিরাম

সিরামে আছে লাইট ওয়েট ফরমুলা এবং সিরামে একটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট এর ঘনত্ব বেশি থাকে। তাছাড়া সিরামে রয়েছে ছোট মলিকিউল যা আপনার ত্বকের অনেক গভীরে পৌছায়। বিশেষভাবে আপনাদের যাদের অ্যাকনে, ফাইন লাইন বা শুষ্ক ত্বক আছে তাদের ক্ষেত্রে সিরাম খুব ভালো কাজ করে।

৪ঃ আই ক্রিম

আই ক্রিম আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে এবং উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। আই ক্রিম চোখের নিচ থেকে পাফিনেস দূর করে এবং চোখের নিচে আলাদা ময়েশ্চার যোগ করে। কিন্তু এই ক্রিম ব্যবহার করার সময় একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে আই ক্রিম ব্যবহারের সময় আপনি অবশ্যই আপনার চতুর্থ আঙ্গুল ব্যবহার করবেন। যেহেতু হাতের চতুর্থ আঙ্গুল সবচাইতে দুর্বল হয় তাই এই আঙ্গুল ব্যবহারে চোখের নিচে খুব বেশি চাপ পড়েনা।

৫ঃ ময়েশ্চারাইজার

আপনার স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যার কারনে এই ধাপ টি কখনই এড়িয়ে চলা ঠিক হবে না। সঠিক ময়েশ্চারাইজার আপনার স্কিনের PH লেভেল ঠিক রাখবে এবং শুষ্ক ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলবে।

স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে আপনি সবচাইতে ভালো ফলাফল পাবেন। যেমন – শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল টাইপের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

 

 

৬ঃ ফেসিয়াল অয়েল

ফেসিয়াল অয়েল আপনার ত্বকের অনেক গভীরে পৌঁছে এবং ত্বককে হাইড্রেটেড করে তোলে। এই লেয়ার টি সবার শেষে ব্যবহার করবেন কারণ এই লেয়ার টি ত্বকে একটি প্রটেক্টিভ ব্যারিয়ার তৈরি করতে সাহায্য করবে। ফলে আপনি যেসব পণ্য ত্বকে ব্যবহার করছেন তা সহজেই ধরে রাখতে সাহায্য করবে। আর আপনি যদি এই ধাপ টি সবার আগে অনুসরন করেন তাহলে আপনি ত্বকে যেসব প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন তা ত্বকে ভালোভাবে মিশে যাবেনা।

৭ঃ সানস্ক্রিন

এই ধাপ টি সবার শেষে এবং শুধুমাত্র সকালের জন্য প্রযোজ্য। বাসা থেকে বের হবার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। শুধুমাত্র যে গ্রীষ্মের সময়েই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে এমন নয়, শীতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন আপনার ত্বক কে UVA, UVB থেকে রক্ষা করবে।